মঠবাড়িয়া থানায় চাকুরি করেও বানারীপাড়ার প্রতি মনের টানে সর্বদা খোঁজ খবর রাখা এ এস আই জাহিদ আবারো পাশে দাড়ালেন এক হতদরিদ্র খ্রিস্টান পরিবারের পাশে। মানবতার প্রতিক খ্যাত পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. জাহিদুল ইসলাম আবারও মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বানারীপাড়ার উপজেলার বিশারকান্দির খ্রিস্টানপাড়ার হতদরিদ্র মেরী চৌধুরীর লাশের সৎকারের জন্য নগদ তিন হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য এবং ঐ পরিবারের যে কোনো সমস্যায় পাশে থাকার ঘোষণা দেন তিনি। গত ১২ ডিসেম্বর শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী দুই সন্তানের জননী মেরী চৌধুরী (৩৫)।
সে বিশারকান্দি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মরিচবুনিয়া খ্রিস্টান পল্লীর দিভুদান চৌধুরীর স্ত্রী। দরিদ্র দিভুদান চৌধুরী পেশায় দিনমজুর। টাকা না থাকায় অ্যাম্বুল্যান্সের পরিবর্তে তার স্ত্রীর লাশ ছোট বৌ গাড়িতে করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। ছোট বৌ গাড়িতে লাশ নিয়ে বানারীপাড়া ফেরিঘাটে পৌঁছলে ব্যাপারটি চোখে পরে সাংবাদিক শফিক শাহিনের। শাহিন এ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিলে দৃষ্টিগোচর হয় পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানায় কর্মরত মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই জাহিদের। তিনি এ ব্যাপারে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ গোলাম মোস্তফা ও সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন দিভুদান চৌধুরী হতদরিদ্র এবং তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই বললেই চলে। এ ছাড়া লাশের সৎকার পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতার জন্য এলাকা থেকে চাঁদা তুলতে হবে। বিষয়টি জাহিদের মনে কষ্ট দেয়। তাই তাৎক্ষণিকভাবে মেরী চৌধুরীর লাশের সৎকারের জন্য তিনি গ্রাম পুলিশ সিদ্দিকুর রহমানের বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেন।। এএসআই জাহিদের অনন্য মানবিকতার জন্য স্থানীয় খ্রিস্টান চার্চের ইনচার্জ তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তাকে ধন্যবাদ জনান। এএসআই জাহিদ পুলিশের চাকরির পাশাপাশি অবসর পেলে যে কোনো সামাজিক সমস্যা নিরসনে সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। তিনি অসহায় ও গরীব-দুখি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে সেবামূলক কাজের পাশাপাশি আর্থিক সাহায্যও করে থাকেন। কখনো নিজের চাকরি সূত্রে প্রাপ্য রেশনের খাদ্যপণ্যও হত দরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দেন। তাছাড়া মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও তিনি আপোশহীন যা আজ সর্বজন বিদিত। এএসআই জাহিদ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় তার কেমিস্ট বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত “ইসমাইল সিকদার কল্যাণ ফান্ড”র মাধ্যমে এ ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ড ও জনকল্যাণে আর্থিক সাহায্য ও সহযোগিতা করে থাকেন।
উল্লেখ্য, পুলিশের এএসআই জাহিদুল ইসলাম বানারীপাড়া থানার এএসআই থাকাকালীন সমাজসেবার স্বীকৃতিস্বরূপ চারবার এবং দ্রুত ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য তিনবার-সহ মোট সাতবার বরিশাল জেলার শ্রেষ্ঠ এএসআই’র পুরস্কার লাভ করেন। এ বিষয়ে এএসআই জাহিদ জনান, পুলিশের চাকরির সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সময় ও সুযোগ পেলে আমার সামর্থ্য অনুসারে যেটুকু পারি অসহায় ও পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াই।