শিরোনাম
বানারীপাড়ায় চাউলাকাঠি ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নির্ধারণে দুই মন্ত্রণালয়ের নিয়মানুযায়ী  জটিলতা  সৃষ্টি, শিক্ষায় ব্যাঘাত  ওয়াসায় চাকুরী করা বানারীপাড়ার  আব্দুল মান্নানকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত একটি মহল, প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ  মেজর এম এ জলিল এর ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী  উপলক্ষে স্মরনসভা প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ  জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে বানারীপাড়া পৌর যুবদলের আলোচনা সভা ও দোয়া মিলাদ অনুষ্ঠিত  প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ প্রকাশিত সংবাদ এর প্রতিবাদ  আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে পূজা মন্ডপ ভাঙচুর করে বিএনপির বদনাম ছাড়াতে পারে —সান্টু আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে পূজা মন্ডপ ভাঙচুর করে বিএনপির বদনাম ছাড়াতে পারে —সান্টু
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১১ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

মঠবাড়িয়ায় ভিক্ষুক’র পাশে মানবতা খ্যাত পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম।।

জাকির হোসেন, পিরোজ পুর জেলা প্রতিনিধি / ৩০৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

মঠবাড়িয়ায় ভিক্ষুক’র পাশে দাড়ালেন মানবতার
প্রতিক পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম । নিজেকে সর্বদা অসহায়দের পাশে রেখে দুঃখ দুর্দশা দূর করতে সর্বদা ব্যস্ত মঠবাড়িয়ায় পুলিশের এ এস আই জাহিদুল ইসলাম। তিনি আবারো প্রমান করলেন স্বইচ্ছা থাকলে সব জায়গাতেই মানুষের সেবা করা যায়। তাইতো পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা গ্রামের বিধবা ভিক্ষুক মোসা. শামবরু (৭৫) কে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে মানবিকতার অনন্য উচ্চতায় নিজেকে তুলে ধরলেন সেই পুলিশ কর্মকর্তা জনপ্রিয় এএসআই জাহিদুল ইসলাম।

জানা গেছে, পারিবারিকভাবে ভিক্ষুক বিধবা শামবরুর কোনো ছেলে-মেয়ে এমনকি ভাই-বোনও নেই। ভিক্ষুক স্বামী হামেজ উদ্দিনকে নিয়ে সরকারি ভেরিবাঁধের ওপর ঝুপড়ি ঘরে তিনি বসবাস করতেন। স্বামীর মৃত্যুর পরে তার মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় মঠবাড়িয়া উপজেলার ১০নং গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামের আরেক বিধবা মোসা. পারভীন বেগম (৪৪) এর জরাজীর্ণ ঘরে। বিয়ের পূর্ব থেকেই মা-বাবার সঙ্গে ও বিবাহিত জীবনে স্বামীর সঙ্গে ভিক্ষা করে নিঃসন্তান শামবরু ভিক্ষুক জীবনের ৬০টি বছর পার করেছেন। এখন বয়সের ভারে তিনি চলৎশক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও ৮০℅ নেই। ব্যাপারটি নজরে আসে বানারীপাড়া থানা থেকে মঠবাড়িয়া থানায় সদ্য যোগদানকারী মানবিক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. জাহিদুল ইসলামের। শোনেন তার করুণ জীবন কাহিনী। ভিক্ষুক শামবরুকে “নবীর শিক্ষা, করো না ভিক্ষা” নীতিবাক্য শুনিয়ে আর কখনো তিনি ভিক্ষা করতে পারবেন না এ মর্মে অঙ্গীকার করিয়ে তার জন্য মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেন। এএসআই জাহিদ যতদিন মঠবাড়িয়া থানায় চাকরি করবেন ততদিন প্রতি মাসে পুলিশের চাকরিতে প্রাপ্য রেশন তাকে দেওয়া হবে বলে জানান এবং তাৎক্ষণিক ১৫ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ২ লিটার তেল, ২ কেজি চিনি, ৫ কেজি আটা, পরনের কাপড়, জুতা, জায়নামাজ, তসবিহ্ ও নগদ ১০০০ টাকা তার হাতে তুলে দেন। এমন জনবান্ধব পুলিশ কর্মকর্তাকে কাছে পেয়ে অসহায় বিধবার চোখে-মুখে ফুটে ওঠে খুশির ঝিলিক। এ এসআই জাহিদ পুলিশের চাকরির পাশাপাশি অবসর পেলে যে কোনো সামাজিক সমস্যা নিরসনে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তিনি অসহায় ও গরীব-দুখি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে সেবামূলক কাজের পাশাপাশি সাধ্যমতো আর্থিক সাহায্যও করে থাকেন। করোনাকালীন সময়ে তিনি নিত্য খাদ্যপণ্য সামগ্রী নিজ হাতে কয়েকশ অসহায় কর্মহীন পরিবারে পৌঁছে দেন। কখনো নিজের চাকরিসূত্রে প্রাপ্য রেশনের খাদ্যপণ্য হত দরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দেন, কখনো অসহায় পরিবারের সন্তানদের স্কুলে লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন, পঙ্গু ও শরীরিক প্রতিবন্ধীদের হাঁস অথবা মুরগী কিনে দিয়ে স্বাবলম্বী করেন, মোবাইল আসক্তি ছেড়ে খেলাধুলার প্রতি শিশু-কিশোরদের আগ্রহী করে তোলার জন্য তাদের হাতে ক্রীড়া সামগ্রী তুলে দেন, করোনার সময়ে গৃহবন্দি মানুষের সময় কাটানোর জন্য ধর্মীয় পুস্তক ও লুডু কিনে দেন, রাস্তার ওপর জঙ্গল পরিষ্কার করে অথবা ভাঙা রাস্তা মেরামত অথবা ভাঙা সাঁকো ও পুল সংস্কার করে চলাচল উপযোগী করে দেন, পথচারীদের যাত্রী ছাউনির ব্যবস্থা করে দেন, অসুস্থ অথবা মানসিক প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন, সরকারি পরিত্যক্ত জমিতে বজ্রপাত নিরোধের জন্য তালগাছ রোপন অথবা সড়কের পাশে আমড়া, পেঁপেঁ, বেগুন ও লাউগাছ রোপণ করে সাধারণ মানুষের জন্য ফল ও সবজির ব্যবস্থা করে দেন। তিনি তার জন্মস্থান পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালি ইউনিয়নের দেউলী গ্রামে করোনাকালীন ও অন্যান্য সময়ে মৃত ব্যক্তির দাফনের নিমিত্তে পারিবারিকভাবে ১৭ শতক জায়গা গোরস্থানের জন্য দান করে দেন। এছাড়া মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও তিনি আপোশহীন, যা আজ সর্বজনবিদিত। এএসআই জাহিদ নিজ এলাকায় তার কেমিস্ট বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত “ইসমাইল সিকদার কল্যাণ ফান্ড”র মাধ্যমে এ ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ড ও জনকল্যাণে আর্থিক সাহায্য ও সহযোগিতা করে থাকেন। উল্লেখ্য, পুলিশের এএসআই জাহিদুল ইসলাম সমাজসেবার স্বীকৃতিস্বরূপ এবং দ্রুত ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য মোট ৯ বার বরিশাল জেলার শ্রেষ্ঠ এএসআই এবং সংসদ সদস্য, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সমাজসেবার স্বীকৃতিস্বরূপ ১২ বার সম্মাননা ও পুরস্কার লাভ করেন। এ বিষয়ে এএসআই জাহিদ জনান, পুলিশের চাকরির সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সময় ও সুযোগ পেলে আমার সামর্থ্য অনুসারে যেটুকু পারি অসহায় ও আর্ত-পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াই। আমার এ প্রচেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে। বানারীপাড়া থানায় কর্মরত অবস্থায় অসহায়দের পাশে থাকার কারনে অনেকের চক্ষু সুল হতে হয়েছে এই মানবিক পুলিশ অফিসারকে। তিনি কোন জনপ্রতিনিধি না হয়েও জনতার পাশে দাড়িয়েছেন। মানুষের কষ্ট দেখলেই তার হৃদয় কেঁদে উঠতো। মানুষের জন্য তার মন সর্বদা ছটফট করতো। কিছু নিন্দুক আছে যারা অসহায়দের পাশে দাড়াবে না অথচ কেহ দাড়ালে তাদের পিছু লাগতে পিছ পা হয় না। তার পর ও এই মানবিক পুলিশ অফিসার কখন ও তার মহানুভবতা থেকে পিছু হটেন নি। সর্বদা মানুষের কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। পুলিশ দপ্তরে এ এস আই জাহিদ একটি উজ্জল নক্ষত্র।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ